Travel To Nepal (1st Part) : Kolkata To Kathmandu

Travel To Nepal: Kolkata to Kathmandu

পরিকল্পনা:- সালটা ইংরাজীর ২০১৭। ঠিক হলো নেপাল যাওয়া হবে সবাই মিলে । কাজের চাপ ছেড়ে পাহাড়ের কোলে কিছুদিনের জন্যে ঘুরে আসা হবে। খোঁজখবর নিয়ে জানা গেলো কলকাতা থেকে নেপাল যেতে হলে দুটো রাস্তা ভালো , ১)পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়ি হয়ে, ২) বিহারের সীমান্ত  রৌক্সল(Raxaul) দিয়ে। 

আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম দ্বিতীয় পথটা দিয়ে যাওয়া হবে কারন কলকাতা থেকে  রৌক্সল এর সরাসরি ট্রেন আছে। রৌক্সল থেকে টাঙ্গা করে নেপালের বীরগঞ্জ (Birgunj) হয়ে কাঠমান্ডু (Kathmandu) পৌঁছানো হবে । সেখানে দুদিন  কাটিয়ে  আশেপাশের জায়গা গুলো ঘুরে পোখরা যাওয়া হবে। পোখরা তে দুদিন ঘুরে চিতোয়ান ন্যাশনাল পার্ক এ জঙ্গল সাফারি করে ফের বীরগঞ্জ - রৌক্সল সীমান্ত দিয়ে  ফেরা হবে। পরিকল্পনা টা এইভাবে করা হয়েছিল যাতে বেড়ানোতে বৈচিত্র থাকে এবং পরিবারের সবাই এর সাথে যাওয়া যায়। কারন খুব উচ্চতা এবং ঠান্ডা সবাই সহ্য করতে পারবে না।

ঠিক হলো ২১ এ ফেব্রুয়ারী যাওয়া হবে ও ফেরা হবে ১ লা মার্চ। কলকাতা থেকে রৌক্সল যাওয়ার জন্যে তিনটি ট্রেন আছে, পূর্বাঞ্চল এক্সপ্রেস , মিথিলা এক্সপ্রেস এবং হাওড়া রৌক্সল এক্সপ্রেস।  আমরা ঠিক করলাম মিথিলা এক্সপ্রেস যাবো কারণ ওটা রৌক্সল এ সকাল ৯ টা তে পৌঁছায় ও হাওড়া থেকে ছাড়ে বিকাল ৩ টা ৪৫ এ। দিনের বেলা সীমান্ত পারাপার করাটাই ভালো। ফেরা ঠিক হলো রৌক্সল হাওড়া এক্সপ্রেস দিয়ে। দাদা  বললো কমপক্ষে ফেরার সময় এসি তে কাটতে কারন ঘোরাঘুরি করে শরীর খুব ক্লান্ত থাকবে, ভালো ঘুম দরকার এছাড়া স্লীপার ক্লাস এ প্রচুর লোক ওঠে বিনা টিকিট এর তো খুব ঝামেলা হয়।  তো সেইমতো টিকিট কাটা হল। সীমান্ত পার হয়ে বীরগঞ্জ এ কিছুক্ষণ থাকা ও ফ্রেশ  হওয়ার  জন্যে একটা হোটেল আগে থেকে বলা হয়েছিলো। আর যদি ট্রেন দেরি  করে তাহলে ওখানে রাত কাটিয়ে পরের দিন ভোরবেলা রওনা দেওয়া হবে।হোটেল এর লোকেরা বললো ওরা কাঠমান্ডু যাওয়ার জন্যে গাড়ি ঠিক করে দেবে। বীরগঞ্জ থেকে বাস আছে কিন্তু ওতে না গিয়ে টাটাসুমো বা সাফারি গাড়িতে যাওয়া কিছুটা আরামদায়ক। কাঠমান্ডু তে দিদি জামাইবাবু থাকেন। ওনারাই আমাদের ওখানকার  প্ল্যানটা  করে দিলেন। কাঠমান্ডু তে হোটেল এবং বাকি ৬ দিনের বেড়ানোর জন্যে গাড়ি ও সাথে ভালো নেপালি ড্রাইভার কাম আমাদের গাইড ঠিক করে দিলেন। ড্রাইভার আমাদের সাথে রৌক্সল সীমান্ত পর্যন্ত সাথে থাকবে ফেরার সময়। আর বাকি জায়গায় হোটেল  ঠিক করা হবে ওখানে গিয়ে।  আপনারা কেউ যেতে চাইলে এই ভাবে প্ল্যান করতে পারেন। ওখানে কয়েকটা হোটেল এ দরদাম করে উঠতে পারলে ভালো যদি না আগে থেকে বুকিং করে রাখেন। আর এই জায়গা গুলো তে প্রচুর হোটেল এবং ফেব্রুয়ারী মার্চ এর দিকে একটু ফাঁকা ফাঁকা থাকে। সুতরাং দরদাম করলে অনেক কমে। ভারতীয় মুদ্রা নেপালি মুদ্রার দেড় গুন্,  এছাড়া নেপালে ভারতীয় মুদ্রা চলে।  তবে ৫০০ বা ১০০০ এর ভারতীয় মুদ্রা নিতে চায় না সাধারণত। যদি নেপালি মুদ্রার দরকার হয় কোনো হোটেল বা দোকান থেকে পরিবর্তন করে নেওয়া ভালো কারণ ওরা আলাদা চার্জ নেয়না।

ভ্রমণ:-
কলকাতা থেকে কাঠমান্ডু:- অনেকদিন অপেক্ষার পর এলো আমাদের যাওয়ার দিন। সবাই খুব আনন্দিত। ব্যাগপত্র আগে থেকেই  গুছিয়ে রাখা ছিল। কিন্তু  আনন্দে বাদ সাধলো ইন্ডিয়ান রেল। যাওয়ার আগেই ৪ ঘন্টা লেট। আর সকালের ট্রেন পোঁছালো সন্ধে তে।

Mountains on the way to Kathmandu
বীরগঞ্জ থেকে কাঠমান্ডুর পথে 
ভাগ্য ক্রমে আমাদের হোটেল বলা ছিল। হোটেল এর লোক নিতে  এসেছিল।  টাঙ্গা করে বীরগঞ্জ পৌঁছানো হলো, রাতের মতো হোটেল এ থেকে পরের দিন সকালে কাঠমান্ডুর উদ্দেশে রওনা দেওয়া হলো। একটু যেতে যেতেই আমাদের সব ক্লান্তি দূর হয়ে গেলো অপরূপ সুন্দর প্রাকৃতিক দৃশ্য তে। রাস্তার একপাশে পাহাড় আর একপাশে পাহাড়ি নদী। একপাহাড় থেকে অন্য পাহাড় মাঝে নদীর উপর ব্রীজ। খুবই সুন্দর। বীরগঞ্জ থেকে কাঠমান্ডু প্রায় ছয়ঘন্টার রাস্তা। রাস্তার মাঝে একটা ধাবা তে কিছুক্ষন বিশ্রাম নিয়ে আবার চলা শুরু ।
 কিছুক্ষনের বিশ্রাম 
অনেক চরাই উতরাই অতিক্রম করে অবশেষে আমরা পৌছালাম কাঠমান্ডু। জামাইবাবু আমাদের জন্যে অপেক্ষা করছিলেন, তিনি আমাদের হোটেল এ পৌঁছে দিলেন। হোটেল এ পৌঁছে গরম জলে স্নান করে শরীর বেশ তরতাজা হয়ে উঠল। আর দিদির বাড়িতে মাছের ঝোল ভাত খেয়ে আমাদের দুদিনের ক্লন্তি একেবারে গায়েব। কিছুক্ষন বিশ্রাম নিয়ে শুরু হলো আমাদের কাঠমান্ডু দর্শন।

কাঠমান্ডু:- কাঠমান্ডু তে প্রথমেই যাওয়া হলো পশুপতিনাথ মন্দির (pashupatinath temple)। সবার দীর্ঘদিনের ইচ্ছা ছিল এই মন্দির দর্শন ও পুজো দেওয়া। মন্দির এর মধ্যে ছবি তোলা নিষিদ্ধ। তাই নিচে মন্দির প্রাঙ্গণ ও মন্দির এর প্রধান ফটক এর কিছু ছবি দিলাম।


 পশুপতিনাথ মন্দির প্রাঙ্গণ  
পশুপথিনাথ মন্দির প্রাঙ্গন  
Pashupatinath Temple
 পশুপতিনাথ মন্দির ফটক 
সেইদিন সারা সন্ধে কাটিয়ে ফিরে আসা হলো হোটেল এ।
পরের দিন সকাল সকাল বেরিয়ে পড়া হল। গাড়ি আগে থেকেই ঠিক ছিল। গোটা কাঠমান্ডু শহর জুড়ে রয়েছে বিভিন্ন মন্দির। দিনের শুরু হল গণেশ মন্দির দর্শন করে।


গণেশ মন্দির 
গণেশ মন্দির এ প্রজ্জলিত প্রদীপ 

গনেশ মন্দির দর্শন করে আবার যাত্রা শুরু করা হল। পথে পড়লো নেপালের রাজবাড়ী নারায়ণহিতি প্যালেস (narayanhiti palace)।

Narayanhiti Palace, Kathmandu, Nepal
নারায়ণহিতি প্যালেস 

এরপর যাওয়া হল বুড়নীলকণ্ঠ দেবের (budhanilkantha temple) মন্দির। এখানে আমরা দর্শন করলাম জলের উপর শায়িত বিষ্ণু মূর্তি।
Kathmandu, Nepal
বুড়োনীলকণ্ঠদেব 


বুড়োনীলকন্ঠ দেব 
তারপর যাওয়া হল সাঙ্গা (Sanga)তে। এখানে পাহাড়ের উপর একটি বিরাট প্রায় ১৪৩ ফুট শিবমূর্তি স্থাপিত করা আছে, যা বহুদূর থেকে দেখা যায়। এই কৈলাশনাথ মহাদেব এর মূর্তির চারপাশে খুব সুন্দর করে সাজানো বিভিন্ন ফুল , অর্কিড ও নানা বাহারি পাতার গাছ দিয়ে।
Sanga, Nepal
শিবমূর্তি সাঙ্গা তে 
তারপর যাওয়া হল নাগরকোট (Nagarkot)। এখানে একটি উচু ওয়াচ টাওয়ার আছে পাহাড়ের মাথায়, যেখান থেকে পুরো কাঠমান্ডু শহর টা দেখা যায়। তারপর গেলাম পাটান দরবার স্কোয়ারে (patansquare)। এখানে অনেক পুরনো মন্দির আছে, মূল আকর্ষণ মাল্লা রাজাদের রাজবাড়ি, ২০১৫ সালের ভূমিকম্পে যেগুলোর অনেক টাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
Patan Square,Kathmandu, Nepal




Patan Square, Kathmandu, Nepal
পাটান দরবার এর রাজবাড়ি ও মন্দির 
ওখান থেকে ঘুরে সোজা হোটেল এ। ফ্রেশ হয়ে দিদির বাড়িতে খাওয়াদাওয়া ও জমিয়ে আড্ডা দিয়ে হোটেল এ । পরের দিন পোখরায় যাওয়ার পালা । সে গল্প পরের পর্বে বলবো। ব্যাগপত্র গুছিয়ে রাখলাম।সারাদিনের ক্লন্তিতে ঘুম চলে এলো।











Comments

  1. Wow!!! It seems a very beautiful place.... Thanks for sharing this article...Very nice information for traveler ..thanks a lot for sharing this information.Thanks a lot for giving proper tourist knowledge and share the different type of culture related to different places. Bharat Taxi is one of the leading taxi and Cab Services provider in all over India.

    ReplyDelete

Post a Comment

Popular posts from this blog

Travel to Nepal (2nd part) : Kathmandu to Pokhara

Travel to Ooty