Travel to Ooty


Ooty, Travel Diary, traveldiary1234.blogspot.com

কথায় বলে 'Ooty the Beauty'. সেই সুন্দরের খোঁজে আমরা বেরিয়ে পড়লাম বেঙ্গালুরু থেকে , এক শীতের সকালে। উটি সারাবছরই যাওয়া যায়, তবে যাওয়ার ভালো সময় হলো সেপ্টেম্বর থেকে মার্চ। বর্ষাকালে গেলে এর অন্য রূপ দেখা যায়। আমরা তো বাইক নিয়ে বেরিয়ে ছিলাম বেঙ্গালুরু থেকে, কিন্তু আপনারা বেঙ্গালুরু বা মহীশুর থেকে বাস বা ট্যাক্সি তে  যেতে পারেন। অন্যদিকে কোয়েম্বাটুর থেকে মেটুপল্ল্যাম হয়ে সেখান থেকে ট্রয় ট্রেন বা ট্যাক্সিতে যেতে পারেন। উটির অন্যতম আকর্ষণ এই ট্রয় ট্রেন । যদিও  ট্রয়ট্রেন খুবই ধীরে চলে, স্পিড আনুমানিক ১০কি.মি. প্রতি ঘন্টা, তবে এতে বসে উটির  প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারেন। কিন্তু  অবশ্যই  আগে থেকে টিকিট বুক করে রাখবেন।

বেঙ্গালুরু বা মাইসোর হয়ে উটি  যাওয়ার পথে পরে বান্দিপুর ন্যাশনাল ফরেস্ট (কর্ণাটক) ও মূদুমালাই ন্যাশনাল ফরেস্ট(তামিলনাড়ু), যেখানে ছিল কুখ্যাত  চন্দনদস্যু  বিরাপ্পান এর আস্তানা। এই জঙ্গলের পথ ধরে যাওয়া খুবএ মনমুগ্ধকর , জঙ্গলের পথে যেতে যেতে দেখতে পেতে পারেন হরিণ, চিতল, ময়ূর, হাতি, বানর, কাঠবেড়ালি  আর নাম না জানা অনেক পাখির। জঙ্গল এর মধ্যে দিয়ে দুটি রাস্তা আছে একটা গুড্ডালোর হয়ে আর একটি মাসিনাগুড়ি হয়ে। মাসীনাগুড়ি দিয়ে Ooty যাওয়ার রাস্তা কম, কিন্তু এতে পরে Ooty র ৩৬ টি কষ্টকর ও খাড়াই বাঁক (36 hairpin bend )। আমরা এই পথ দিয়েই উটি গিয়েছিলাম। আমাদের পৌঁছাতে বিকাল হয়ে গেছিল। হোটেল এ গিয়ে ফ্রেশ হয়ে সেদিন সন্ধে বেলা আমরা সেন্ট স্টিফেন চার্চ ও সন্ধ্যের উটি শহর টা ঘুরে দেখলাম। 

St. Stephen Church, Ooty
St. Stephen Church
পরেরদিন সকালে ব্রেকফাস্ট ও উটির অসাধারন কফি পান করে বেরোলাম নীলগিরি পর্বত এর সর্বোচ্চ শৃঙ্গ Dodabetta  peak এর উদ্দেশ্যে। যাওয়ার  পথ টি বেশ সুন্দর, আঁকাবাঁকা রাস্তা , দুপাশে সবুজ চাবাগান আর নীল পাহাড়। Dodabetta  peak এ একটি watch tower আছে, এটি সকাল ৯ টা  থেকে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত সাধারণ এর জন্যে খোলা থাকে, আমরা না জেনেই অনেক সকালে বেরিয়েছিলাম। সকালের উটি খুব এ সুন্দর, কিন্তু শীতের সকালে উটির কনকনে ঠান্ডায় বাইক চালাতে গিয়ে হাত জমে যাওয়ার উপক্রম। তাই বিভিন্ন জায়গায় দাঁড়িয়ে প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করতে করতে পৌছালাম আমাদের গন্তব্যে। এই পথে যাওয়ার সময় কিছু ছবি তুলেছিলাম নিচে দিলাম।


Tea Garden at Ooty




অবশেষে আমরা পৌছালাম Dodabetta Peak এ।  এখানে ওয়াচ টাওয়ার থেকে একদিকে দেখা যায় কুর্গ ভ্যালি, একদিকে কুর্নুর আর একদিকে উটি। ওপরে নীল আকাশ আর তার মাঝে কুয়াশাচ্ছন্ন পাহাড়চূড়া গুলো দাঁড়িয়ে আছে , সূর্যের আলো সেই পাহাড়চূড়া গুলো ছুঁয়ে যাচ্ছে।

Watch Tower at Dodabetta Peak

Blue Mountains

View from Dodabetta Peak

View from Dodabetta Peak
ওখান থেকে ফেরার পথে আমরা গেলাম চকলেট ফ্যাক্টরি আর টি (Tea) ফ্যাক্টরি তে। আসার পথে কিছু ছবি তুলেছিলাম নিচে দিলাম।



Ooty Vally
এর পর আমরা গেলাম উটির বোটানিক্যাল গার্ডেন এ। বিশাল জায়গা জুড়ে রয়েছে এই গার্ডেন। এখানে পুরোটা ঘুরতে অন্তত তিনঘন্টা সময় লাগবে। এখানে নানান প্রজাতির গাছ, গুল্ম, ফুল, অর্কিড সাথে বিভিন্ন রকমের পাখি, প্রজাপতি দেখতে পাবেন। আপনাদের জন্যে কয়েকটা ছবি দিলাম।

Ooty Botanical Garden
Botanical Garden Ooty
Beautiful flowers at Botanical Garden
Orchid
বোটানিক্যাল গার্ডেন এর কাছে ই আছে রোজ গার্ডেন বা গোলাপ বাগান । কিন্তু দুপুর হয়ে যাওয়ায় আর ক্লান্তির জন্যে বোটানিক্যাল গার্ডেন থেকে ফিরে আমরা একটু রেস্ট নিলাম হোটেল এ। বিকালে গেলাম উটি লেক এ। এখানে  বোটিং করা যায়, এছাড়া বিভিন্ন রকমের শো, বাচ্চাদের জন্যে ট্রয়ট্রেন চড়ার ব্যবস্থা, fun গেমস আছে। এখানে গেলে বিকালটা   আপনার ভালোই কাটবে।



ওখান থেকে ফিরে উটি মার্কেট এ ঘুরলাম। উটি র চকলেট কিনলাম, তারপর খাওয়া দাওয়া করে সোজা হোটেল এ। পাহাড়ে তাড়াতাড়ি সন্ধে হয় আর শীত এর জন্যে ৮-৯টার  মধ্যে দোকানপত্র  সব বন্ধ হয়ে যায়। 

পরেরদিন ব্যাগ পত্র গুছিয়ে বেরলাম। আমরা ফিরেছিলাম গুড্ডালোরে হয়ে কারণ মাসিনাগুড়ির রাস্তা তা ওয়ান ওয়ে ছিল । ফেরার পথে আমরা গেলাম পাইন ফরেস্ট,  ৯থ  মাইল্স্ শুটিং পয়েন্ট, পাইকারা ড্যাম, পাইকারা  ফলস ও পাইকারা লেক। প্রতিটি জায়গা অপূর্ব সুন্দর , বিশেষত পাইকার ফলস, ড্যাম আর লেক । 

Pykara Dam
Pykara Falls
Pykara Lake
উটি থেকে কুনুর (coonoor) যাওয়া যায়, টয় ট্রেন এ চড়ে উটি থেকে কুনুর যেতে ভালোই লাগবে। আমাদের সময় কম ছিল আর টিকেট ও আগে থেকে বুক ছিল না। সেই জন্যে যাওয়া হয়নি।
এরপর ফেরার পালা। আমরা ঠিক করেছিলাম এতটা পথ একটানা না এসে আমরা মাইসোরে রাত্রে থেকে পরের দিন ফিরব। সেইমতো মাইসোরে হোটেল বুক করলাম। মাইসোর এ আগে এসেছিলাম সে গল্প আগে বলেছি , কিন্তু মাইসোরে একটা bird sanctuary আছে, নাম Ranganathittu Bird Sanctuary (পক্ষীরালয়), ওখানে আগে যাওয়া হয়নি। পরের দিন ওখানে ঘুরে বাড়ি ফেরা হল। 

এই পোস্টটি কেমন লাগলো নিচে কমেন্ট এ জানাবেন, ভালো লাগলে অন্যদের সাথে শেয়ার করবেন।

  


Comments

  1. Nice photos. I have no words for ooty . this place so wonderful. Thanks for the share.
    Visit agra - same day agra tour by car

    ReplyDelete
  2. দারুন সুন্দর লাগলো আপনার বর্ণনা। আমি আগেও গেছি কিন্তু কন্ডাক্ট টুর। তাই এবার মোটর সাইকেল এ যাবার ইচ্ছে। অন্তত পাঁচ ছয় জন হলে জার্নি টা enjoyable হতো।

    ReplyDelete

Post a Comment

Popular posts from this blog

Travel To Nepal (1st Part) : Kolkata To Kathmandu

Travel to Nepal (2nd part) : Kathmandu to Pokhara